ক্ষয়িষ্ণু সন্দ্বীপ
দিলাল রাজা, কমরেড মুজফ্ফর, লাল মোহন সেন, কবি আব্দুল হাকিম, ওয়ালী
গান্ধী, আবুল কাসেম সন্দ্বীপ, দ্বীপবন্ধু মুস্তাফিজ এবং দ্বীপকল্যাণ কর্মে নিবেদিত
প্রাণ-পুরুষ সমীপে
এতো স্বাধীনতা, এতোটা বিজয়
তবে তোমাকে ছাড়াই।
সমুদ্র তোমাকে খায়, রাষ্ট্র নিরুপায়
দ্বীপের মানুষ দ্যাখে সমস্ত মুখর দিন
মেঘ-ঝড় কাক চিল নিয়ে যায়,
টুকরো টুকরো লুটপাট
তারপর
তোমাকে কোথায় খুঁজি স্মৃতির সন্দ্বীপ?
তুমি কি এখনও সেই কালাপানি, দ্বীপান্তরে?
তোমাকে বরণ করি আমি, অন্যেরা হরণ
তোমাকে স্মরণ করি আমি, তুমি খুঁজছো মরণ।
মানুষ পালিয়ে বাঁচে, তুমিতো বাঁচো না
তুমি কি দেখোনি রোমÑ হাতে হাতে গড়ে ওঠা?
দেখেছো মহেঞ্জোদারো, হরপ্পার জীবন্তপতন
তোমাকে যতন দেবে এমন বিদ্রোহ বীজহীন, চরিত্রহীন।
তুমি স্বনির্ভর স্বর্ণদ্বীপ ফেঁসে আছো ইতিহাসের আস্তাবলে,
আজ মরা ঘাসে মুখ ঘষে কাটছো জাবর!
যেন প্রচীন পুন্নাল তেল গড়া ঘানির বলদ
পানের বরোজ, চুন-সুপারির স্বাদ ছেড়ে
তুমি বেশ ছুঁয়ে আছো বিশ্ব শহরের বহুধা জীবিকা।
গ্রামচষা শফি বাঙালির চারণ কবিতা নেবে না শহর।
কেউতো নিলো না সেই ক্ষয়িষ্ণু মাটির দায়,
মৎস্য ও লবন চাষের ব্যাঘ্র-বিনিয়োগ,
পর্যটনের মোহনাগুলো অনাদরে বয়স হারায়
যেভাবে হারিয়ে যায় প্রবাসের ক্যাসিনোয়
নাভীছেড়া অভিবাসী,
টেমস্; মিয়ামি বিচ; লং আইল্যান্ড চেনে,
রূপসোনা সন্দ্বীপ চেনে না,
স্বজনেরা সড়ক খোঁজে না।
হাতিয়া আরেক ভাই, উড়ির চরের বোন
হয় হয় করেও হলো না সড়কের রাখি বন্ধন।
যে পথে পাথর নেই, পানির পাথারে সব প্রাণীরা পুতুল,
জলোচ্ছ্বাসে ভেসে থাকা পেটফোলা বার্ষিক আলোকচিত্র,
ইথারে বিপদ সংকেত ভেসে এলে
প্রথম তোমাকে ভাবি গা-ডোবা সন্দ্বীপ,
পথ খুঁজি প্রাণপণে ঐ প্রাণের প্রণিধান কামনায়,
আমি এক দাবি-ধরা কবি, সমাজে নগণ্য দ্বীপ
ক্ষয়রোধে; অপবাদে গড়ি কবিতার বেড়ি বাঁধ।
তবে মানুষ কতোটা দেবে,
ভেবে দেখো, তিনিই পারেন যিনি
সাজালেন পৃথিবীর মেঘ-পাহাড়-নদীর প্রেমমালা।
তাঁর কাছে সমুদ্র যেমন চাই
তেমনই দাবিতে ধরি দাও হাঙর দমন।
সাগরের ডাগর উদার চোখ থেকে
দানবের মণি-সাপ তুলে নাও,
সুষমা সন্দ্বীপে দেখো প্রধান আরজ
সাগরের খাদ্য তালিকা খানিক বদলাও,
সৃষ্টিসেরা মানুষের মাটি কেনো বানভাসী খিদের কামড়,
দ্বীপের দুধের স্বাদে পানি নয়, প্রাণকে ছোঁয়াও।