Print

প্রকৃতি ও প্রগতির পাগলামী

কবি আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ও প্রবন্ধকার সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী শ্রদ্ধাবরেষু

 

প্রকৃতি ও প্রগতির ভেতর কে বড়ো পাগল

 এমন পাল্লাপাল্লির কালে

বাটখারা চাপা পড়ে কেঁদে ওঠে নগরীর প্রাণী।

মানবাধিকারের রেবন সানগ্লাসে দেখা যায়

মেট্রোপলিটন মশা ও মানুষ উভয়ে সমান।

জীবহত্যা মহাপাপ বলে প্রকৃতির পূজনীয় সন্তানেরা

বপন করেছে বচন

পচন ধরেনি সেই মহাসত্যে,

মেয়রের কামান নামেনি মশাদের আধুনিক জলাশয়ে,

কারণ ছোট বা বড়

প্রাণী ও পশুর সুরক্ষায় শাসিয়েছে প্রগতির সেমিনার।

মেঘেদের জালে জালে সূর্যালোকের লোডশেডিং,

প্রকৃতি যেভাবে ছাড়ে প্লাবনের পবিত্র প্রসাব

আর চুলহীন শিশুর খুলিতে খরার শুষ্কতা দেখে

প্রগতির সুকৌশলী হাতগুলো নদীতে বসায় বাঁধ,

অতঃপর খেলা খেলা মুক্তির খেয়ালে

স্রোতের  পানিকে বলে বালু হয়ে যাও, মরু হয়ে যাও

হাঁটবো চাকার গাড়ি আর দেখাব পুতুল নাচ চরদখলের,

গ্যাসের বদলে খোঁজো বনের জ্বালানি,

কাগজের কাজ সারো কলাপাতা, গাছের বাঁকলে,

পরীক্ষা পাগল ওহে রাখাল বালক অথবা ব্যান্ডের তরুণেরা

কাকের কোরাসে শোনো ফাঁস করা প্রশ্নপত্রের দুর্লভ গান।

 

শোনো ভ্রমণ-ভ্রমর পর্যটক

দুর্ঘটনা-পটীয়সী যানবাহনকে জানিয়ে গুডবাই

হাঁটা দাও পথে অথবা দাঁড়াও প্রকৃতির পাশে,

মেলার বাজারে দেখে যাও তাবৎ খাদ্য ও শস্যকণায়

অগ্নিকন্যা নামক রমণী এসে আগুন ছড়ায়...

এইভাবে ক্ষমতার মুকুট শোভিত জাদুকরের অদৃশ্য মন্ত্রে

সবগুলো  বৈদ্যুতিক ল্যাম্পপোস্ট মোমবাতি হয়ে যায়।

 

জীবন নামের এক অদৃশ্য ক্রেডিট কার্ড নিয়ে

জাদুর জগৎ দেখে কেঁদে ওঠে নাদান মানুষ,

প্রকৃতি অথবা প্রগতির ঘাড়  কে দেবে প্রকৃত ঠাঁই

কে যে ঘোড়া আর কে ষাঁড়

দুই পাগলের পিঠে আজ বালি-পানি পারাপার।

 

অথচ প্রার্থনা ছিল প্রকৃতির কাছে রৌদ্রকরোজ্জ্বল বৃষ্টি,

যদিও প্রগতি দিলো ছাতা’তলা দ্রুতযান এবং

জটিল যন্ত্রের রাজ্যময় অনাসৃষ্টি...।