Print

বৃষ্টিভেজা রোদের বসত

কবি জীবনানন্দ দাশ স্মরণীয়বরেষু

 

বর্ষণে কে বেশি কাঁদে

আকাশ না মানুষের বুক ভরা মেঘ?

আকাশের ভয়-রং নীল চোখে

বাঁদুরের রং নেমে আসে,

মানুষের চোখে আসে দু’রঙা রেইন-গ্লাস।

 

মানুষ বলতে আজ তৃতীয় বিশ্বের কলাগাছ,

কলাপাতার ছাতায় চলা উদার আকাশমুখো

এই আমাদের কথাই বলছি।

 

উঠোনকে ফুটো করে কুয়া মেলে, পানিতো মেলে না।

ডালভাত, অথবা একটি বাড়ি একটি খামার

কাঁথাঢাকা চোখে-মুখে স্বপ্নের সওদা কত,

খরাকে তাড়াতে, ফসলের মাঠে গিয়ে বাম্পার বাম্পার বলে

উল্লাসের আকাক্সক্ষায় কতকাল বৃষ্টিকে ডেকেছি,

সেঁচের শ্যালোর প্রাণে বিদ্যুৎ প্রবাহ খুঁজে মাথা ঠুকি,

বুঝেছি খুঁটির জোর কম হলে

আকাশ-নদী বা সেঁচ না দিলেও পানির প্লাবন

তৃতীয় বিশ্বের চোখে চোখে সাজায় বিষন্নতার সংসার।

 

বৃষ্টির দখল দেয়া চোখে যার সকল মৌসুমী সুখ একাকার,

তার কাছে বৃষ্টির বিলাস হয়তো আরেক কৌতুহল

তাহলে কি আকাশেরও দুঃখ আছে?

নাকি উদার আকাশ জাল ফেলে টেনে নেয়

মানুষের মন-পুকুরের মেঘ-মাছগুলো।

 

হৃদয় হালকা হয়,

বৃষ্টি এলে রোদগুলো মুখগুলো কোথায় লুকায়?

জানেন কোথায়

ছন্দমুখর টিনের চালে বৃষ্টি বৃষ্টিকে নাচায়,

রোদ ঢোকে মানুষের বুকে

                মানুষ প্রফুল্ল হয়ে যায়

 

এইবার সকলেই কবি হয়, কেউ বাদ নয়

কাদাময় কষ্টের বাগানগুলো নিপাট কবিতাময়।