বনপশুদের সেবায়
চিড়িয়াখানায় চারটি বাঘের আটটি ছিলো ছানা,
হঠাৎ তাদের বাদ-প্রতিবাদ : ফিরিয়ে দিলো খানা।
মাংস ছিলো আস্ত খাসির, সঙ্গে কাঁচা কলা
ভাষণ তাদের এই সবে আর স্বাদ নেবেনা গলা।
আমরা কি আর যেনো তেনো বংশ কাদের জানো?
সুন্দরবন তন্ন করে কুষ্ঠি খুঁজে আনো।
আমার দাদু, ওনার নানু সবাই মহারাজ
হরিণ দিয়ে নাস্তা সেরে খুলতো কাজের ভাঁজ।
গরু-হাতির দেহ ছাড়া লাঞ্চ হতো না কারুর,
দাঁত খোঁচাতে লাগতো কাঁটা তিনখানা সজারুর।
বিশাল বটের বৃক্ষ ছায়ায় আরাম ঘুমের নেশা,
বানর-শেয়াল-ভালুক-কুমির নেইতো মেলামেশা।
রয়েল বেঙ্গল নাম ছিলো যার, স্যালুট দিতো সবাই
চোখের পলক বিগড়ে গেলেই মরণ থাবায় জবাই।
সাঁঝ-সেঁজুতির দূরের দোয়েল ঘুম ভাঙাতে ধীরে
প্রশ্ন এবার, রাতের বেলা কী খেতো এই বীরে?
গা ছম ছম গা ছম ছম সে সব যদি শোনো-
বন্য প্রাণীর শরীর দিয়ে হয় না ডিনার কোনো।
শিকার প্রেমিক মানুষ যখন গভীর বনে ঢোকে,
নখর থাবায় বনের বাবায় জীবন পাঠায় শোকে।
যেনো তেনো মানুষ তো নয়, বৃটিশ খেতো বেশি
আমরা হলাম হালুম রাজার মালুম করা পেশী,
চিড়িয়াখানায় বন্দি আছি বাঘরাজাদের নাতি,
মুরগি ছাগল খাবো কেনো দিতেই হবে হাতি।
পাশের খাঁচায় বানর-বেড়াল ইঁদুর কি জঘন্য?
এক গোয়ালেই বাঘে-মোষে আমরা কি নগণ্য?
তোমারা যারা কেয়ার টেকার, কেয়ার করো বলছি,
বনের প্রাণি খাঁচার ভেতর খিদায়-ঘৃণায় জ্বলছি।
কেয়ার টেকার বললো হেসে ব্যাঘ্রনাতি শুনুন,
অতীত রেখে ভবিষ্যতের দিনগুলোকে গুনুন।
বনপশুদের মনগুলোকে সভ্য করার জন্য
চিড়িয়াখানায় বন্দি রেখে দিচ্ছি সেবা, অন্ন।